অ্যাজটের
জীবনের মূলে ছিল কৃষি। টেক্সকোকো হ্রদের দ্বীপে জায়গার স্বল্পতার কারণে
অ্যাজটেকরা হ্রদের অগভীর অংশ ভরাট করে তা বাড়িয়ে ছিল। তীর থেকে মাটি আর
হ্রদের তলদেশ থেকে কাদা সংগ্রহ করে গড়ে তোলা হতো আয়তাকার কৃষি জমি বা
কিনামপাস । কিনামপাসগুলো দৈর্ঘ্যে ২০০ মিটারের মতো হলেও প্রস্থে কখনোই ১০
মিটারের অধিক হতো না। যে সব কিনামপের বা কৃষক খালসদৃশ জলভাগের দুপাশে জেগে
থাকা জমিগুলো চাষ করতো তারাই আবার তাদের
তলা সমতল ক্যানোর সাহায্যে সেখান থেকে ফসল সংগ্রহ করতো। কিনামপাসগুলো ছিল
অভূতপূর্ব উর্বর প্রকৃতির। এক বছরেই সেখান থেকে সাতটি ফসল সংগ্রহ করা সম্ভব
হতো। এতে কোনো সেচের প্রয়োজন পড়তো না। কারণ পার্শ্বস্থ খাল থেকে
কিনামপাসের মাটিতে অনবরত পানি প্রবেশ করতে পারতো।
অন্যদিকে এর উর্বরতা রহস্য ছিল অ্যাজটেকদের অত্যাধুনিক কম্পস্পিং পদ্ধতির মাঝে নিহিত। যার মাঝে হ্রদের তলানি ব্যবহার করা হতো। কিনামপের অনবরত তাদের ক্যানোর সাহায্যে লেকের তলদেশ থেকে এই তলানি সংগ্রহ করতো। একটি থামের মাথায় কাপড়ের থলি আটকে ট্রল করে পুরু পলির স্তর সংগ্রহ করা হতো। তারপর একে কৃষি জমির ওপর ছড়িয়ে দেয়া হতো। সঙ্গে মেশানো হতো মানব বর্জ্য। খালের পানিতে সরাসরি বর্জ্য ফেলা হতো বলে সেটাই আবার কালক্রমে তলানির অংশে পরিণত হতো, এর কিছু অংশকে সরাসরি মাটির ওপর ছড়িয়ে দিয়ে তলানি দিয়ে ঢেকে দেয়া হতো। কর্টেস ও তার দখলদার বাহিনী ১৫১৯ সালে এখানে আসার পর থেকে আধুনিক ইউরোপীয় নির্মাণশৈলীর কারণে শত বছর ধরে হাজার হাজার হেক্টর কিনামপাস বিলীন হয়ে গেছে। মেক্সিকোসিটির দক্ষিণপ্রান্তে জোকিমিলকোর একটি অংশে হ্রদের খানিকটা অংশ এখনো টিকে আছে। তাই এখনো কিনামপাস কৃষি পদ্ধতি টিকে আছে ত্রিশ বর্গকিলোমিটার জায়গা জুড়ে।
১৯৮০ সালের গোড়ার দিকে বিকল্প প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে এরকম একটি সংস্থার পক্ষ থেকে একদল বিজ্ঞানি জোকিমিলকো পরিদর্শনে যায়। সেখানে তারা দেখতে পায় আধুনিক কৃষকরা এখনো তাদের বর্জ্য খালে ফেলছে। তা সত্ত্বেও সেখানকার পানি দুর্গন্ধহীন। নেই মানব বর্জ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত রোগ-জীবাণুর প্রকোপ। সংগ্রহকৃত তলানির নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গেছে এর বিশেষ একটি অনুজীব ২২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে। গরম পানির ঝরনার মাঝে পাওয়া ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে এর সাদৃশ্য আছে। অস্বাভাবিক এই ব্যাকটেরিয়াটিই অ্যাজটেকদের বর্জ্য পরিশোধনে সাফল্য এনে দিয়েছিল বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। এর সাহায্যে দ্রুত কম্পোস্ট উৎপাদন সম্ভব। এটি বর্জ্যরে নাইট্রোজেন বন্ধনে ভূমিকা রাখে, ক্ষতিকর রোগ-জীবাণু নিষ্ক্রিয় করে। জৈব ভাঙন প্রক্রিয়া দ্রুততর করে।
গবেষণাগারে ব্যাকটেরিয়াটিকে কালচার করা সম্ভব হয়েছে। আধুনিক কৃষিতে এর ফলপ্রসূ ব্যবহার সম্ভব বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তার তাপপ্রেমী এ বন্ধুসুলভ ব্যাকটেরিয়া কেন টেক্সকোকো হ্রদের তলদেশে তার আবাস গড়ে তুললো, বিজ্ঞানীদের কাছে তা এক বিস্ময়কর ঘটনা।
(এই অংশের সূত্র: ১৮ জুলাই ২০০৯ এর দৈনিক যায়যায় দিনে প্রকাশিত সোহরাব সুমন রচিত একটি নিবন্ধ ...)
অ্যাজটেকরা প্রকৃতির আবর্তন বা চক্র নিবিড়ভাবে লক্ষ করেছিল। তারা প্রকৃতির খেয়ালি নিষ্ঠুর
ভূমিকাও লক্ষ করেছিল। প্রকৃতির এই খেয়ালি ভূমিকা নিয়ন্ত্রনের জন্য ওরা তৈরি করেছিল দুটি বর্ষপঞ্জী। বর্ষপঞ্জী দুটি একত্রে মিলিয়ে হত আরও একটি বর্ষপঞ্জী। জিহুহিটল ছিল বাৎসরিক পঞ্জী।
এতে উল্লেখ থাকত কৃষি ও ধর্মীয় উৎসবাদির। ২য়টির নাম টোনালপোহুয়াল্লি। এটি একেবারেই ধর্মীয় ...অনেকটাকোষ্ঠীর মতন; কে কোন্ তারিখে জন্মালে কি হয় এসবের আলোচনা। দুটি মিলে হত জিউহমলপিলি। এর মানে বছরসমূহ।
অন্যদিকে এর উর্বরতা রহস্য ছিল অ্যাজটেকদের অত্যাধুনিক কম্পস্পিং পদ্ধতির মাঝে নিহিত। যার মাঝে হ্রদের তলানি ব্যবহার করা হতো। কিনামপের অনবরত তাদের ক্যানোর সাহায্যে লেকের তলদেশ থেকে এই তলানি সংগ্রহ করতো। একটি থামের মাথায় কাপড়ের থলি আটকে ট্রল করে পুরু পলির স্তর সংগ্রহ করা হতো। তারপর একে কৃষি জমির ওপর ছড়িয়ে দেয়া হতো। সঙ্গে মেশানো হতো মানব বর্জ্য। খালের পানিতে সরাসরি বর্জ্য ফেলা হতো বলে সেটাই আবার কালক্রমে তলানির অংশে পরিণত হতো, এর কিছু অংশকে সরাসরি মাটির ওপর ছড়িয়ে দিয়ে তলানি দিয়ে ঢেকে দেয়া হতো। কর্টেস ও তার দখলদার বাহিনী ১৫১৯ সালে এখানে আসার পর থেকে আধুনিক ইউরোপীয় নির্মাণশৈলীর কারণে শত বছর ধরে হাজার হাজার হেক্টর কিনামপাস বিলীন হয়ে গেছে। মেক্সিকোসিটির দক্ষিণপ্রান্তে জোকিমিলকোর একটি অংশে হ্রদের খানিকটা অংশ এখনো টিকে আছে। তাই এখনো কিনামপাস কৃষি পদ্ধতি টিকে আছে ত্রিশ বর্গকিলোমিটার জায়গা জুড়ে।
১৯৮০ সালের গোড়ার দিকে বিকল্প প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে এরকম একটি সংস্থার পক্ষ থেকে একদল বিজ্ঞানি জোকিমিলকো পরিদর্শনে যায়। সেখানে তারা দেখতে পায় আধুনিক কৃষকরা এখনো তাদের বর্জ্য খালে ফেলছে। তা সত্ত্বেও সেখানকার পানি দুর্গন্ধহীন। নেই মানব বর্জ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত রোগ-জীবাণুর প্রকোপ। সংগ্রহকৃত তলানির নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গেছে এর বিশেষ একটি অনুজীব ২২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে। গরম পানির ঝরনার মাঝে পাওয়া ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে এর সাদৃশ্য আছে। অস্বাভাবিক এই ব্যাকটেরিয়াটিই অ্যাজটেকদের বর্জ্য পরিশোধনে সাফল্য এনে দিয়েছিল বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। এর সাহায্যে দ্রুত কম্পোস্ট উৎপাদন সম্ভব। এটি বর্জ্যরে নাইট্রোজেন বন্ধনে ভূমিকা রাখে, ক্ষতিকর রোগ-জীবাণু নিষ্ক্রিয় করে। জৈব ভাঙন প্রক্রিয়া দ্রুততর করে।
গবেষণাগারে ব্যাকটেরিয়াটিকে কালচার করা সম্ভব হয়েছে। আধুনিক কৃষিতে এর ফলপ্রসূ ব্যবহার সম্ভব বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তার তাপপ্রেমী এ বন্ধুসুলভ ব্যাকটেরিয়া কেন টেক্সকোকো হ্রদের তলদেশে তার আবাস গড়ে তুললো, বিজ্ঞানীদের কাছে তা এক বিস্ময়কর ঘটনা।
(এই অংশের সূত্র: ১৮ জুলাই ২০০৯ এর দৈনিক যায়যায় দিনে প্রকাশিত সোহরাব সুমন রচিত একটি নিবন্ধ ...)
অ্যাজটেকরা প্রকৃতির আবর্তন বা চক্র নিবিড়ভাবে লক্ষ করেছিল। তারা প্রকৃতির খেয়ালি নিষ্ঠুর
ভূমিকাও লক্ষ করেছিল। প্রকৃতির এই খেয়ালি ভূমিকা নিয়ন্ত্রনের জন্য ওরা তৈরি করেছিল দুটি বর্ষপঞ্জী। বর্ষপঞ্জী দুটি একত্রে মিলিয়ে হত আরও একটি বর্ষপঞ্জী। জিহুহিটল ছিল বাৎসরিক পঞ্জী।
এতে উল্লেখ থাকত কৃষি ও ধর্মীয় উৎসবাদির। ২য়টির নাম টোনালপোহুয়াল্লি। এটি একেবারেই ধর্মীয় ...অনেকটাকোষ্ঠীর মতন; কে কোন্ তারিখে জন্মালে কি হয় এসবের আলোচনা। দুটি মিলে হত জিউহমলপিলি। এর মানে বছরসমূহ।
রেফারেন্সের জন্য ধন্যবাদ।
উত্তরমুছুনলেখা পড়ে আরো অনেক কিছু জানতে পারলাম।