পৃষ্ঠাসমূহ

সোমবার, ১৪ অক্টোবর, ২০১৩

অ্যাজটেক সভ্যতা ...( চতুর্থ পর্ব )

অ্যাজটেকদের নিত্যদিনের জীবনযাত্রা ছিল সাদামাটা। স্বামীই গৃহকর্তা । তার পেশা চাষবাস বা কারুকাজ। মেয়েদের দায়িত্ব ছিল কাপড়বোনা ও রান্না। স্বামী-স্ত্রী আর সন্তান নিয়ে সংসার। সে সংসারে কখনও স্বামীর ঘনিষ্ট আত্মীয়স্বজনও থাকত । অ্যাজটেকদের প্রায় সারাদিনই কাজ করতে হত। শিশুরাও কাজ করত। ১০ বছর অবধি বাবার কাছেই পড়ত ছেলে শিশুরা। বিদ্যালয়গুলি ছিল উপসনালয়ের সঙ্গে অ্যাফিলিয়েটেড। ধর্ম ও সমরবিদ্যা। মেয়েরাও পড়ত। অথবা ঘরে থেকে মায়ের কাছে ঘরকান্না ।
বাড়িতে বসেই অ্যাজটেকরা লেনদেনের জন্য পন্য তৈরি করত। আগেই বলেছিল অ্যাজটেক সভ্যতায় মুদ্রাব্যবস্থা ছিল না বলে লেনদেন হত পন্যের। পন্য বিনিময়ের জন্য জাগুয়ার এর চামড়া ছিল লোভনীয়।
একটু আগে বললাম মেয়েদের দায়িত্ব ছিল কাপড়বোনা ও রান্না। কাজেই এ প্রশ্ন উঁিক দেয় মনে : অ্যাজটেক দের খাবার/দাবার কি ছিল?
এর উত্তর ভুট্টা।
ইওরোপে যেমন গম; আমাদের যেমন ভাত। সেরকম ভুট্টাই ছিল অ্যাজটেকদের প্রধান খাবার।
মেক্সিকো উপত্যকায় রং, আকার ও মসৃনতা অনুযায় অনেক ধরনের ভূট্টা হত; এবং অ্যাজটেক মেয়েরা সে ভুট্টা নানাভাবে রেঁধে খেত। তার একটি হচ্ছে টামালে। ভুট্টা পিষে পানি দিয়ে রুটির মত করে ভিতরে মাংস কি মরিচ।
ভুট্টা ছাড়াও অ্যাজটেক খাবারের তালিকায় ছিল নুন ও মরিচ। অ্যাজটেকরা উপবাস করত। তখন নুন ও মরিচ খাওয়া ছিল নিষেধ। অ্যাজটেকরা সীম খেত। তাছাড়া নানা জাতীয় নির্বিষ শিকড়বাকড়ও খেত। পানীয়ের মধ্যে খেত পানি। আর নানা জাতে নির্বিষ উদ্ভিদের রস। আর পালকোয়ে খেত।
পালকোয়ে হচ্ছে ঘৃতকুমারী (সেঞ্চুরি প্লান্ট) এর রস দিয়ে তৈরি এক প্রকার ঝাজা জিনিস। মেক্সিকোয় এখন টিনের কৌটায় পালকোয়ে বিক্রি হয়। অ্যাজটেকদের সে কারিগরি বিদ্যা ছিল না।
অ্যাজটেক সমাজে মদের প্রচলন ছিল। তারা মধু ও নানান ফলের রস মিশিয়ে তৈরি করত মদ । আশ্চর্য এই- অ্যাজটেক সমাজে মদের প্রচলন ছিল ঠিকই তবে তারা মাতলামি পছন্দ ছিল না। মদ খেলে শাস্তি হত! এমনকী অ্যাজটেক অভিজাতরাও মদ খেত না! ওদের মতে মদ খায় ছোটলোকেরা! বরং তারা কাকাও থেকে তৈরি মদ খেত। মাংসের মধ্যে অ্যাজটেকরা খেত টার্কি, মোরগ/মুরগি। ইগুয়ানা ও গোলপার। মাছও খেত। চিংড়ি মাছ । পতঙ্গও খেত। পতঙ্গের ডিমও খেত ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন